Monthly Archives: August 2022

শান্ত হাতিদের শান্ত থাকতে দাও

হৃদয়ে বাস করে এক বুনো হাতির পাল
কলাগাছ খায় আর কচি পাতা নরম ডাল।
দল বেধে তাদের নিত্য যাতায়াত
ঝরনায় জলপান, আর যেখানে রাত, কাত।
ততক্ষণ কাওকে নিয়ে মাথা ঘামায় না,
যতক্ষন পথে তাদের কেউ থামায় না,
অথবা বাধ্য না করে,শুড় তুলে ছুড়তে
এরা আপন মনে চলে ফিরতে ঘুরতে!

যতটা নিরীহ আমায় দেখা যায়, দেখে যাও।
ফুঁসে ওঠা পর্যন্ত টেনে নিয়ে দেখতে চাও?
সেটা ঠিক হবে না। গুরুকুল থেকে শিক্ষা,
ভুল,আগুন লাগিয়ে পোড়ে কি তার পরীক্ষা!

Leave a comment

August 30, 2022 · 8:53 pm

পাসওয়ার্ড

সে বসে খুট খাট করছি। এসময় মেমোটা এগিয়ে দিল।
“মোবাইলটা ঠিক হয়েছে?” কন্ঠ গম্ভীর, বিরক্ত।
ভদ্রলোকের দিকে তাকালাম। যে চেহাড়াটা মনে গেঁথে আছে। এখনও একই রকম। অনেক মোটা হয়েছে।
“কি ঠিক হবে না, না তুমি পারবে না?
না পারলে বল অন্য কোথাও দেই!
তিন দিন ধরে ঘুরাচ্ছো! জানো আমি কতটা ব্যাস্ত?”

জহরলাল তনিমার স্বামী। নতুন যৌবনে তনিমার সাথে আমার প্রেম ছিল। গভীর প্রেম। রমনা পার্কে বসে যেই পরিমান চিনাবাদাম খেয়েছি, না খেলে এদেশ বাদামে সয়ংসম্পূর্ন হতো। যথা নিয়মে সে প্রেম টেকে নাই।

তনিমার বিয়ে হয় ওমান প্রবাসী ডাক্তার জহরলালের সাথে।
সেই শোকে কিছু দিন মদ গাজা ভাং খাই। তারপর পারিবারিক লাথ্থি গুতা। তারপর গৃহত্যাগ করে একেবারে সন্দীপ। প্রথমে শুটকি শুকানোর কাজ করেছি তারপর ট্রলারে। ট্রলারের ইন্জিনের টুকটাক সাড়াইয়ের কাজ করতে করতে ভাল কাজ শিখে গেলাম। চট্টগ্রামে একটা রিপেয়ারিং দোকানে কাজ পেলাম। তারপর ঘড়ি, ক্যাসেট প্লেয়ার, টিভি ঠিক করতে করতে শেষ পর্যন্ত মোবাইল ঠিক করা শিখে নিলাম। সেটাই করে খাই।

আবার ঢাকা ফিরলাম পাঁচ বছর আগে। ইস্টার্ন প্লাজায় একটা দোকানে শেয়ারে কাজ করতাম পরে শ্যামলীতে নিজে দোকান দিয়েছি।

কাকতলীয় ভাবে এখানেই একদিন তনিমা মোবাইল নিয়ে আসলো। বুঝলাম বিধাতা কাহিনী জমাতে চাচ্ছেন। তনিমার কথা তো ভুলেই ছিলাম।
বিয়ে থা করি নি সেটা অন্য ব্যাপার। এখানে তনিমার ভুমিকা কিছুতো আছেই।
স্মার্ট ফোন।লেটেস্ট মডেল, পানিতে পড়ে আর অন হচ্ছে না। স্ক্রীন ফাটা। তনিমাকে আমি দেখেই চিনেছি কিন্তু ও আমায় চিনতে পারে নি। বড় চূল দাড়িতে আমার চেহাড়া যিশুখ্রিস্টের আকার নিয়েছে। সেই গাল তোব্রানো, শুকনা টিং টিংগে নই। ইন্জিনের কাজ করতে করতে একটা এক্সিডেন্ট হয়েছিল, দেড় মাস চট্টগ্রাম মেডিকালে ভর্তি ছিলাম। বা চোখের নীচ থেকে চিবুক পর্যন্ত একটা গভীর কাটা দাগ আছে যা পুরো চেহাড়াকে বদলে দিয়েছে।অনেক রুক্ষ, কিছুটা ভয়ঙ্কর।

আর তনিমা! একটু মোটা হয়েছে। তাতে লাবন্য আরো বেড়েছে। পেলাব তুলতুলে গালে আমার চুমুর চিহ্নও নেই। সেই একবারই চুমু খেয়েছিলাম। বিদায় চুম্বন। কিছুটা জোর করে। কামড় দিয়েছিলাম। ক্ষত করতে চেয়েছিলাম সারা জীবনের জন্য!
কত দিন আমার কাঁধে মাথা রেখে আকাশ দেখেছে, সেই কালো কুঞ্চিত কেশ তেমনি আছে শুধু আমার মুখের উপর উড়ে এসে চোখের দৃষ্টিকে ঝাপসা করতে পারে না।

এরকম কেস ইদানিং আমি অনেক পাচ্ছি। করনার কারনে সেনিটাইজার দিয়ে মুছে মিছে সিল নষ্ট করে ফেলে। তারপর ভিজলে পানি ঢোকে।
বললাম, “স্ক্রীন ফাটলো কি করে?”
তনিমা কিছুক্ষন চুপ করে থাকলো
“ছুড়ে মেরে ছিলাম।”
তনিমা তো খুব নরম সরম মেয়ে ছিল। চুপ চাপ। তবে কি বদলে গেছে!
“এটাও ঠিক করবো?”
“হবে?”
“হবে। তবে সময় লাগবে”
চাইলে তখনি ঠিক করতে পারতাম, এ মডেলের স্ক্রীন আমার কাছে আছে। তবু বললাম “রেখে যান।”
মনে অন্য একটা উদ্দেশ্য আছে।সীম খুলে দিয়ে ওর পুরানো ফোনে লাগিয়ে দিলাম আর আমার ফোন নম্বরটা লিখে দিলাম ঠিক হল কিনা খবর নেবার জন্য।
গত তিন দিনে দশ বার ফোন করেছিল জহরলাল। তারপর নম্বর ব্লক করে দিয়েছি।
ট্রু কলারে নাম দেখলাম তাই ফোন ধরি নি।
“ফোনটা অন হয়েছে, স্ক্রীনটা আনতে দিয়েছি। নতুন ফোনতো। ওরিজিনাল স্ক্রিন পেতে দেরী হচ্ছে।”
“ফোন ধর না কেন? আমার খামাখা আসতে হল! “
“আন নোন নম্বর ধরি না। চাঁদা চায়, হুমকি দেয়।
কাল দুপুরে এসে নিয়ে যাবেন।
“আমার ফিরতে রাত হয়! আজকে কত ঝামেলা করে এলাম। কাল যেন কথার ঠিক থাকে। ম্যাডাম এসে নিয়ে যাবে।”
এইটাই চাচ্ছিলাম। তনিমা আবার আসুক।
“অবশ্যই। দুটো থেকে তিনটার মধ্যে আসতে বলবেন।”

প্রতিশোধ নেয়া বাকি আছে।
বলেছিলাম, “চল পালিয়ে যাই। ও রাজি হয় নি। নিজের ফ্যামিলির কথা চিন্তা করেছে আমার কথা চিন্তা করে নি। নয়ত আমার জীবনটা এমন হবার কথা না।

তনিমা এল পিকক ব্লু ড্রেসে। ময়ূরের মতই লাগছে।
“সিমটা দিন।’
লাগিয় মোবাইলটা হাতে দিলাম। নেড়ে চেড়ে দেখছে।
“পাসওয়ার্ড টা লাগবে।”
সে একটু আড়াল করে পাসওয়ার্ড দিল। আমি আমার নম্বর চেপে কল দিলাম।
“হ্যালো”
“হ্যালো! হ্যা ঠিক আছে।”
ওর নম্বরটা নেয়া হল।
এবার পরেরটা।
ছবি গুলো নিতে হবে। ইন্টিমেট কোন ছবি নিশ্চয়ই পাওয়া যাবে বা সেলফি – ভাইরাল করার বা ব্লাকমেইলের।
টোপ ফেললাম।
“আপনার অপারেটিং সিস্টেমটা পুরানো। আপগ্রেড করে দেবো?
না হলে নতুন এপসগুলো চলবে না।”
“সময় লাগবে?”
“দশ মিনিট।”
“ঠিক আছে।”
আমি কম্পিউটারের ইউ এসবি কর্ডটা মোবাইলে লাগালাম। ও ফিঙ্গার প্রিন্ট দিয়ে অন করলো। ডাউনলোড অল ফটো টু পিসি অপসনে দিতেই পাসওয়ার্ড চাইল।
আমি ওর হাতে ফোনটা দিয়ে বললাম, “পাসওয়ার্ড প্লিস।” বুকের ধ্বকধ্বকানিটা বেড়েছে।
এবারে আর আড়ালে নিল না।
টাইপ করলো- এন আই আর এম ও এল। চমকে উঠলাম।
ডাউনলোড শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু এর আর কোন দরকার আছে?
সে কি এখনও আমায় ভালবাসে?

আমার পাসওয়ার্ডও আমার সবচেয়ে প্রিয় মানুষের নামে, তনিমা।

Leave a comment

August 27, 2022 · 9:01 am

খেলছি কানামাছি

এটাও বিশ্বাস করতে বল, নম্বর তোমার কাছে নেই!
ওয়ান সেভেন ওয়াব ফাইভ জিরো জিরো সিক্স থ্রি এই..
হারিয়ে ফেলেছো ফোন, মুছে গেছে ফোনের সব ডাটা?
ল্যান্ড ফোনের লাইন তো অনেকদিন থেকেই কাটা।

এটাএ বিশ্বাস করতে বল হারিয়েছ বাড়ির ঠিকানা
ভুলে গেছ পথ চিহ্ন যা মনে ছিল কাগজে লিখা না!
অথচ গোপন ডাইরীর তে জানতাম লিখেছ মুক্তাক্ষরে
হৃদয়ের অন্তস্থল ছুয়ে ,‘প্রিয়তম গন্তব্য‘ যুক্তাক্ষরে।
হারিয়েছ সে ডাইরী, না তার ঠিকানা এখন ভাগাড় ?
যে টেলিপ্যাথিতে পাঞ্জাবির সংগে মিলত শাড়ি পাড়
সেভাবে বুঝে আমার উপস্থিতি, আসো না, বারান্দায়।
বন্ধ থাকে জানালা, না দেখায় আমার দিন যায়!

এটাও বিশ্বাস করতে বল এখনও তোমার মনে পড়ে
এটাও বিশ্বাস করতে বল স্মৃতি মেদুরতা আনমনা করে
সত্যিই জানতে ইচ্ছা করে কোথায় কেমন আছি !
বিশ্বাস করতে বল আমরা আসলে খেলছি কানামাছি!

Leave a comment

August 25, 2022 · 1:15 pm

এই শহর, সেই শহর

কি করে খবর পাঠাই
প্রখর ক্ষরায় মেঘদূতেরই খবর নাই!
দমবন্ধ শহরের ভাগাড়ে মুমূর্ষু হাওয়া
না তোমার গায়ের গন্ধ যায় পাওয়া
না গুজব ওড়ে না তোমার নামে রটনা
শহরের নাভিশ্বাস উঠেছে এটাই ঘটনা।

আমার দ্বার্থক কবিতা অর্থ হারায়
সরকারী কাচি কেটে অনর্থে দাড়ায়।
মনের কথা মনে পচে মরে দ্বিধায়
বলা হয় না বোধগম্য অসুবিধায়।

আকাশ ফাটিয়ে বলি, ভাল আছো?
প্রতিধ্বনী শুনি একা একা বাঁচো।

এই শহরে সবাই একা একা বাঁচে।
বা মরে! স্মৃতি ফলকে দেখ লেখা আছে।

Leave a comment

August 24, 2022 · 5:22 am

‘কারেন’- আমার ভালবাসা

এক ঘন্টার কথা বলে
আসলা দুই ঘন্টা পর,
জান তুমি না থাকলে
আন্ধার থাকে ঘর!

কথা দিয়ে কথা রাখলানা,
সারাক্ষণ সাথে থাকলা না।

একবারের কথা বলে,
এই নিয়ে গেলে চারবার
কেমনে সহ্য করি
তোমার এহেন কারবার?

কথা দিয়ে কথা রাখলানা
সারাক্ষণ সাথে থাকলা না।

বন্ধু রে
কে রাখসে তোমার নাম কারেন
আসলে খালি যাই যাই,
হাত ধরলে কয় ছাড়েন, ছাড়েন!

কথা দিয়ে কথা রাখলানা
সারাক্ষণ সাথে থাকলা না।

Leave a comment

August 8, 2022 · 8:31 pm

কবিতা কনিকা-৩০৯

চুপ থাকা তোমার মুখোশ
ভালবাসা লুকানোর চেষ্টায়।
আর যদি এইই তোমার মুখ,
চিনলাম তোমায় শেষটায়!

Leave a comment

August 5, 2022 · 9:26 pm